১. নতুন কারিকুলাম শুরু -২০২৩
আগামী ২০২৩ বছর থেকে নতুন কারিকুলামে প্রবেশ করতে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের শুরুর বছরে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন বই দেওয়া হবে। এরপর ২০২৫ সালের মধ্যে নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী, বিষয় ও পরীক্ষা কমিয়ে বইয়ে আনা হয়েছে পরিবর্তন। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা এক বছরের পরিবর্তে দুই বছর হবে। দশম শ্রেণির আগে কোন পাবলিক পরীক্ষা থাকবে না। একজন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষায় পড়বে সেটি ঠিক হবে উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে। নতুন কারিকুলামে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে দুই দিন। যেটি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য অতি আনন্দেরে বিষয়।

২ । নতুন পরীক্ষা প্রশ্ন পদ্ধতি:
এই কারিকুলামে পরীক্ষার প্রশ্ন পদ্ধতি কী হবে এ বিষয়টি নিয়েই সবার আগ্রহ রয়েছে। কারণ চলমান সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের ভীতি এখনো রয়েছে। তাই তারাও চাইছেন এ পদ্ধতি না থাকুক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের পর পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি থাকবে না। কোন পদ্ধতির আলোকে প্রশ্ন থাকবে তা প্রকাশ করা হবে নভেম্বরে।
৩. থাকবে না সৃজনশীল পদ্ধতি!
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জানান, সৃজনশীল পদ্ধতিতে আগামী বছর থেকে আর পরীক্ষা থাকছে না। উন্নত বিশ্রে পরীক্ষা পদ্ধতির আলোকেই তৈরি করা হয়েছে। একই তথ্য জারিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। তিনি বলেছেন, নতুন কারিকুলামে সৃজনশীল প্রশ্ন থাকছে না । সেখানে অন্য রকমের প্রশ্নপত্র হবে।
৪. কেন থাকছে না সৃজনশীল পদ্ধতি?
মুখস্থ নির্ভর পড়াশুনার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধা যাচাই করার লক্ষে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু হয়েছিল। ২০০৮ সাল থেকে দেশে যখন এটি চালু করা হয়, তখন বলা হয়েছিল, এই পদ্ধতিতে নোট- গাইড বই থাকবে না, কোচিং – প্রাইভেট বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু ফল হয়েছে উলটো। শিক্ষকরাই বিষয়টি ভালোভাবে না বোঝায় শিক্ষার্থীদের কোচিং – প্রাইভেট বা সহায়ক বইয়ের দ্বানস্থ হতে হচ্ছে আগের চেয়ে আরো বেশি। অভিভাবকদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভীত রয়েছেন শিক্ষকরাও । প্রায় ৪২ ভাগ শিক্ষিকের এই বিষয়ে ধারণা নেই। এসব কারণে এ পদ্ধতি বাতিলের দাবি শুরু করেন। অনেকেই মনে করেছেন সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করাই ছিল শিক্ষায় সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। যার খেসারত দিয়েছেন সবাই।
মূলত এই কয়েকটি যুক্তির আলোকে সৃজনশীল পদ্ধতি বাদ দেওয়া হচ্ছে। আমরা পরবর্তী যে নতুন টপিকসটি সাজিয়েছি তা হচ্ছে-
৫. নতুন কারিকুলামে যা যা থাকবে (বিষয় ও মূল্যায়ন)
প্রথমে আমরা দেখে নেব –
- নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক- প্রাথমিক শিক্ষা হবে দুই বছরমেয়াদী।
- নতুন শিক্ষাক্রমে অনুযায়ী , প্রথম ও তৃতীয় শেণির আগে স্কুলে কোনো পরীক্ষা থাকবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন হবে।
- প্রাথমিকের প্রথম , দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে শিখনকালীন মুল্যায়ন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে শতভাগ।
- চতুর্থ পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি , গণিত, বিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ । সামষ্টিক মূল্যায়ন ৪০ শতাংশ। স্বাস্থ্য সুরক্ষা , ধর্ম শিক্ষা ও শিল্পকলায় শিখনকালীন মূল্যায়ন ১০০ শতাংশ।
- যষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানে শিখনকালীন মুল্যায়ন ৬০ শতাংশ । সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৪০ শতাংশ।
- নবম ও দশম শ্রেণিতে ৫০ শতাংশ শিখনকালীন ও ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে।
- দশম শ্রেণিতে গিয়ে হবে পাবলিক পরীক্ষা। শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা হবে।
- আগের যখন নবম ও দশম শেণি মিলে পাবলিক পরীক্ষা হত এখন শুধু দশম শ্রেণির সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে এসএসসি পরীক্ষা হবে।
- একাদশ ও দ্বাদশ পাঠ্যসূচির ওপর প্রতিবর্ষ শেষে একটি করে পরীক্ষা হবে। একাদশ ও দ্বাদধশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ হবে। এই স্তরে শিখনকালীন মূ্ল্যায়ন ৩০ শতাংশ আর সামষ্টিক মূল্যয়ন ৭০ শতাংশ।
৬. বিষয় নির্ধারণ-
- প্রাথমিকের জন্য আটটি বিষয় নির্বাচন করা হয়েছে।
- আর ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে ১০টি অভিন্ন বই পড়ানো হবে।
- নতুন শিক্ষাক্রমে একাদশ শ্রেনিতে গিয়ে শাখা পরিবর্তন হবে। এই স্তরে তিনটি আবশ্যিক বিষয় থাকবে।
শিক্ষক সহায়িকা- ১ম শ্রেণি-

বইগুলো সংগ্রহ রাখতে এখনি ডাউনলোড করে নিতে পারে।
Downlink: শিক্ষক সহায়িকা- ১ম শ্রেণি-